সাহেদ হোসেন চৌধুরীঃ গৃহবধূ খালেদা ইসলাম অমি’র উপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনার প্রতিবাদে ফেনীতে ১৫ সংগঠনের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফেনীর শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়, সহায়, ফেনী ব্লাড ডোনেট এসোসিয়েশন, রক্ত কনিকা বাংলাদেশ,উম্মাহ্ ব্লাড ডোনেশন, প্রত্যয় ব্লাড ডোনার ক্লাব, আলোকিত ব্লাড ডোনার ক্লাব, ফেনী ওয়েলফেয়ার ব্লাড ফাইটার্স, .বন্ধন মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশন ফেনী, ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ ফেনী, একতা রক্তদান ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, রক্তের সন্ধান, আমাদের ফেনী ব্লাড গ্রুপ, আমরা যুবরা চাই পরিবর্তন ও মানব সেবা সংস্থা ফেনীর সদস্যরা৷ এ সময় সংগঠন গুলোর নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন,অভিলম্বে এ ঘটনার সাথে জড়িত সলককে গ্রেফতার করে বিচারের আয়োতায় আনতে হবে। গৃহবধূ অমি’র উপর বারে বারে নির্যাতন ও এসিড সন্তাসের প্রতিবাদ এবং দোষীদের সর্বোচচ শাশ্তি দাবী করেন। এমন ঘটনা যেন আর ফেনীর বুকে আর দেখতে না হয় তাই সবাইকে সোচচার হবার আহব্বান জানানো হয়।
এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা যায়,ফেনীর ফুলগাজীর মেয়ে খালেদা ইসলাম অমি (২৫) নিজ বাড়ীতে এসিড সন্ত্রাসের কবলে পড়েন। গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে ফুলগাজীর দরবারপুর ইউনিয়নে অমির ঘরের জানালা দিয়ে তার গায়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এসিডে অমির মুখ, গলা ও হাত ঝলসে গেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র আরো জানায়, অমি বাড়িতে একা ছিলেন। তার বাবা-মা সহ সবাই নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ফেনীতে এক মানববন্ধনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। এসময় তাকে জানালা দিয়েএসিড ছোড়া হয়। অমি তার পরিবারকে জানিয়েছেন তার স্বামীর পক্ষের দুই জন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন।
অমিকে তাৎক্ষনিক ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল স্হানান্তর করা হয়েছে। আজ ৬ সেপ্টেম্বর অমিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
অমির শ্বশুর বাড়ী ফেনীর পরশুরামের সাতকুচিয়া। এর আগে অমির শ্বশুর বাড়ীর লোক জন সাপ দিয়ে অপচিকিৎসার নামে নির্যাতনের পর এবার এসিড ছুড়ে শরীর ঝলসে দিয়েছে।
ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের জানান, এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন, মো. তারেক মজুমদার (২৫) ও আবদুল্লাহ আল মিনার (১৯)।
উল্লেখ্য, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুরের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে খালেদা ইসলাম অমির বিয়ে হয় প্রায় ৫ বছর আগে পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের প্রবাসী লিখন আহমেদের সাথে। অমির পরিবার অভিযোগ করে, বিয়ের পর থেকে লিখনের মা ও ভাই-বোনরা মিলে খালেদাকে যৌতুকের জন্য নানা নির্যাতন করতে থাকে। গত ৭ আগস্ট চিকিৎসার নামে সাপ দিয়ে অপচিকিৎসার নামে নির্যাতন করা হয়। এরপর গৃহবধূ অমিকে বাবার বাড়ীতে রেখেই চিকিৎসা করা হয়। এ ঘটনায় অমির পরিবারের পক্ষ থেকে ফুলগাজী থানায় মামলা করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ অমির ননদ হাসিনা আক্তার ও ননদের স্বামী আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।